আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভারতের বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার বিচারের রায় ঘোষণা করা হবে। দেশটির সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন বা কেন্দ্ৰীয় অনুসন্ধান সংস্থা’র (সিবিআই) বিশেষ আদালত ঐ দিন রায় ঘোষণার সময় ৩২ জন অভিযুক্তকে আদালতে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। খবর ভয়েস অব আমেরিকা’র।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ৯২ বছর বয়সী ভারতীয় জনতা পার্টি’র (বিজেপি) নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী, ৮৬ বছর বয়সী বিজেপি নেতা মুরলী মনোহর যোশী, বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী এবং তৎকালীন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির কল্যাণ সিং।
১৯৯২ সালে উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো ও তাদের সমর্থকেরা, যারা নিজেদের করসেবক বলে অভিহিত করে পঞ্চদশ শতাব্দীর বাবরি মসজিদ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। যার ফলে ভারতের ইতিহাসের পটভূমি অনেকটা বদলে গিয়েছে এবং হিন্দু-মুসলমান মেরুকরণটাও অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কল্যাণ সিংকে সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। কারণ ঐ ঘটনার পর সারা ভারতে দাঙ্গা লাগে এবং তাতে প্রায় তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত এ মামলার বিচারের ভার পাওয়ার পর থেকে বছরের পর বছর পেরিয়ে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, দুই বছরের মধ্যে মামলার বিচার পর্ব শেষ করতে হবে। তারপরেও অবশ্য আদালত আরও কয়েকবার সময় বাড়ানোর অনুরোধ করে। সেই বর্ধিত সময়ের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩০ সেপ্টেম্বর এবং সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত ঘোষণা করেছে সেই দিনই তারা রায় জানাবে। লালকৃষ্ণ আডবাণী যেদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতের শুনানিতে হাজিরা দেন, তার একদিন আগে মুরলী মনোহর যোশী একইভাবে শুনানিতে যোগ দেন। আডবাণীকে একশোটিরও বেশি প্রশ্ন করা হয়। দুই জনেই তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে মদত ও নেতৃত্ব দানের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তবে উমা ভারতী স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, আমার কিছু এসে যায় না। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দায়ে আমাকে যদি ফাঁসিও যেতে হয় তাও আমার দেশের লোক আমার নামে জয়ধ্বনি দেবে। কল্যাণ সিংও জানিয়েছেন, কৃতকর্মের জন্য তিনি অনুতপ্ত নন। এই অবস্থায় ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে চলা মামলাগুলোর একটির বিচারে রায় কী হবে তা জানার জন্য দেশবাসী অপেক্ষা করে রয়েছে।