বিনোদন ডেস্ক :
আগামীকাল ২৯ জুন মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী ২০২১।
শিল্পকর্ম মূল্যায়ন হয় শিল্পপ্রেমী দর্শকদের দৃষ্টিকোন থেকে। আর প্রদর্শনী ছাড়া দর্শকদের সামনে শিল্পকর্ম উপস্থাপন করা শিল্পীদের পক্ষে সম্ভব নয়। খুব কম সংখ্যক শিল্পীই নিজের একক প্রদর্শনী আয়োজন করতে পারেন কারন প্রকৃতপক্ষে তা ব্যয়বহুল। আর এই কাজটিকে সহজলভ্য করার জন্য জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রদর্শনী আয়োজন করে থাকে।
এ বছর ২৪তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী ২০২১-এর নীতিমালা অনুযায়ী ২১ বছরের উর্ধে বাংলাদেশের ৭৮৬ জন শিল্পীর সহস্রাধিক শিল্পকর্মের আবেদন জমা পড়ে। শিল্পকর্ম নির্বাচকমন্ডলী বিভিন্ন মাধ্যমের ৩২৩ জন শিল্পীর ৩৪৭টি শিল্পকর্ম নির্বাচন করেন। নির্বাচিত এ সকল শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে চিত্রকলা ১৫৭টি, ছাপচিত্র ৫৩টি, আলোকচিত্র ১৭টি, ভাস্কর্য ৪৭টি, প্রাচ্যকলা ১০টি, মৃত্শিল্প ৭টি, কারুশিল্প ২০টি, গ্রাফিক ডিজাইন ৫টি, স্থাপনাশিল্প ১৮টি, নিউ মিডিয়া আর্ট ৭টি, পারফরমেন্স আর্ট ৬টি। শিল্পকর্ম নির্বাচন কমিটির সদস্যরা হলেন শিল্পী মামুন কায়সার, শিল্পী মাহমুদা বেগম, শিল্পী মো. মুছলিম মিয়া, শিল্পী স্বপন কুমার সিকদার এবং শিল্পী ফারুক আহাম্মদ মোল্লা।
প্রদর্শনীর বিস্তারিত তুলে ধরার জন্য ২৭ জুন ২০২১ বেলা সাড়ে ৩টায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রদর্শনী আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন চারুকলা বিভাগের পরিচালক সৈয়দ মাহবুবা করিম।
এবছরই ২৪তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী ২০২১ এ প্রত্যেকটি মাধ্যমে একটি করে মোট ১১টি শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। আর সকল মাধ্যম মিলিয়ে “বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার-২০২১” নামে একটি শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, মাধ্যমভিত্তিক প্রতিটি শ্রেষ্ঠ পুরস্কারের জন্য এক লক্ষ টাকা এবং সকল মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ পুরস্কারের জন্য দুই লক্ষ টাকা প্রদান করা হবে। এছাড়া একটি মেডেল, একটি ক্রেস্ট ও একটি সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। পাঁচটি সম্মানসূচক পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে যার প্রতিটির মূল্যমান পঞ্চাশ হাজার টাকা। সাথে স্পন্সরশীপ পুরস্কারও রয়েছে। পুরস্কার নির্বাচনের জন্য জুরি কমিটির সম্মানিত সদস্যগণ হলেন শিল্পী আব্দুল মান্নান, শিল্পী আবুল বারক্ আলভী, শিল্পী ড. ফরিদা জামান, শিল্পী ড. মোস্তফা শরীফ আনোয়ার, শিল্পী সৈয়দা মাহবুবা করিম, শিল্পী মোস্তফা জামান।
এ বছরের নতুন সংযোজন চারজন কিউরেটরের তত্ত্বাবধানে চারটি ভিন্ন মাত্রার আর্ট প্রজেক্ট প্রদর্শনীতে যুক্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক কিউরেটরের অধীনে দশজন করে শিল্পী কাজ করেছে। প্রত্যেক কিউরেটর তাদের নিজস্ব থিম এবং স্পেস নিয়ে তাদের কর্ম সাজিয়েছে। প্রতিটি আর্ট প্রজেক্টের উপস্থাপনা অসাধারণ। প্রত্যেক কিউরেটরকে তাঁদের প্রজেক্টের জন্য দুই লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জাতীয় চিত্রশালার ছয় নং গ্যালারিতে এই কিউরেটেড উপস্থাপনার আয়োজন রাখা হয়েছে। কিউরেটরগণ হলেন শিল্প কনক চাঁপা চাকমা, শিল্পী মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, শিল্পী মো. জিহান করিম, শিল্পী জয়দেব রোয়াজা।
জাতীয় চিত্রশালার ১, ২, ৪, ভাস্কর্য, ৫ ও ৬ নং গ্যালারিতে ২৯ জুন হতে ৩১ জুলাই ২০২১ পর্যন্ত এই প্রদর্শনীর সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। করোনা মহামারির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ভার্চুয়াল প্রদর্শনীর আয়োজন রাখা হয়েছে।
২৯ জুন ২০২১ বিকাল ৪টায় ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠোনে প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।