বাংলাদেশের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার, ঘুষ দেওয়া এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় হুমকির অভিযোগ এনেছে কুয়েতের প্রসিকিউশন। আগামীকাল বৃস্পতিবার দেশটিতে গ্রেফতার হওয়া পাপুলসহ নয়জনের বিচার শুরু হবে।
একই সঙ্গে পাপুলের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে কুয়েতে দুই জন সংসদ সদস্যও বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। এ দুইজন হলেন সাদুন হাম্মাদ আল-ওতাইবি ও সালাহ আবদুলরেদা খুরশিদ। অভিযুক্তদের মধ্যে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক অ্যাসিসট্যান্ট আন্ডার সেক্রেটারি বরখাস্ত মেজর জেনারেল মাজেন আল-জাররাহও রয়েছেন।
চলতি বছরের ৬ জুন রাতে কুয়েতের মশরিফ এলাকা থেকে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদ্য শহিদ ইসলাম পাপুলকে গ্রেফতার করে দেশটির পুলিশ। পাপুল সেখানকার মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অন্যতম মালিক। পাচারের শিকার পাঁচ বাংলাদেশির অভিযোগের ভিত্তিতে পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েতি প্রসিকিউশন। গ্রেফতারের পর ১৭ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাপুলকে কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।
তিনি রিমান্ডে স্বীকার করেছেন, সে দেশের কর্মকর্তাদের কত ঘুষ দিয়েছেন। এমনটি প্রকাশ করে স্থানীয় দৈনিক। একই সঙ্গে দেশটির দুইজন সংসদ সদস্য পাপুলকে বেআইনিভাবে সহযোগীতা করছেন বলে তাদের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
মামলার তদন্তের সময় অভিযুক্ত হিসাবে ১৩ জনের নাম উঠে আসে। এর মধ্যে থেকে চারজনকে তদন্তকালে বাদ দেওয়া হয় বলে স্থানীয় দৈনিক আল-কাবাসের এক খবরে বলা হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে এমপি পাপুলসহ ছয়জন কারাগারে আছেন। জামিনে রয়েছেন দুই কুয়েতি এমপি এবং একজন পলাতক।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন পাপুল। এরপর তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি কুয়েতে সাধারণ শ্রমিক হিসেবে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন বলে জানা যায়। তার মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানি পরিচ্ছন্নতাকর্মী নেওয়ার কাজ করলেও কুয়েতে অন্যান্য ব্যবসার কাজও বাগিয়েছিলেন পাপুল।
‘জেনারেল ট্রেডিং অ্যান্ড কনট্রাক্টিং’ নামক লাইসেন্স ছিল পাপুলের, যার মাধ্যমে শিশুদের খেলনা থেকে শুরু করে অ্যানটিক কার্পেটের ব্যবসাও তিনি করেন। পাপুল ও তার কোম্পানির ব্যাংক হিসাব ইতোমধ্যে জব্দ করেছে কুয়েত কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশেও তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।