নির্দিষ্ট দক্ষতা, একটি কম্পিউটার আর ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে পৃথিবীর যে কোন স্থান থেকেই অর্থ উপার্জন সম্ভব। আর তাই আউটসোর্সিং হতে পারে বাংলাদেশের গ্রামীন অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। কমাতে পারে মানুষের শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা। ধারণা করা হচ্ছে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে আরও জনপ্রিয় হবে গিগ ইকোনমি। ঘরে বসে অফিসের কাজ হচ্ছে। কর্মসংস্থানের জন্য শহরে থাকার প্রয়োজনীয়তা কমে আসছে। আউটসোর্সিংয়ের বিশাল দুনিয়ায় গ্রামীণ মানুষের বিচরণও বাড়ছে।
ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’র সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘যদি কারও স্পৃহা এবং কঠিন পরিশ্রম ও ইচ্ছা থেকে থাকে তাহলে গ্রামে থেকেও সে ভালো একটা অর্থনৈতিক ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারে।’ করোনার প্রভাবে শহর ছেড়ে গ্রামে থাকলেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন দক্ষ ফ্রিল্যান্সাররা। ফ্রিল্যান্সার নাসিম বলেন, ‘আমরা যদি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও বিদুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ পর্যাপ্ত করতে পারি তাহলে গ্রামের তরুণদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের বেকারত্ব দূর করতে পারি।’
দেশের সব প্রান্তের মানুষের শিক্ষা নিশ্চিত করতে কম মূল্যে অনলাইন শিক্ষা দিচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান। অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং কোর্স প্রশিক্ষণ প্লাটফর্ম ইশিখন ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইব্রাহিম বলেন, ‘সারাদেশে যে কোন প্রান্ত থেকে ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারছে যে কেউ। অনলাইনে এ প্রশিক্ষণ নেওয়ার ফলে কোন সময়ই অপচয় হচ্ছে না।’
গ্রামীণ তরুণদের ফ্রিল্যান্সিংয়ে আরও বেশী আগ্রহী করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ ও পুরস্কারসহ নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস’র (বেসিস) সভাপতি আলমাস কবির বলেন, ‘আমরা দেখেছি বাংলাদেশে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও অনেক তরুণ তরুণী ল্যাপটপে বসে ইন্টারনেট কানেকশনের মাধ্যমে বিদেশের জন্য কাজ করছে এবং তারা ভাল রোজগার করছে। এটা একটা অর্থনৈতিক মুক্তি। মফস্বলে থেকে অবদমিত হওয়ার ভাবনার কোন কারণ নেই।’ সম্ভাবনাকে সবটুকু কাজে লাগাতে পারলে প্রবাসী আয়ের মতোই অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখবে আউটসোর্সিং।