অমর একুশে গ্রন্থমেলা না হলে ৫০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির আশংকা করছেন পুস্তক-প্রকাশনা ও বিক্রয় সমিতির নেতারা।

তারা বলছেন, করোনা সর্বনাশ করেছে বই বাণিজ্যে। বাংলা একাডেমি বলছে, সম্ভব হলে মার্চ-এপ্রিলে আয়োজন হবে গ্রন্থমেলার। তারিখ পিছিয়ে এপ্রিলে আয়োজনের কথা বলা হলেও, নানা সমীকরণে মেলা ফেঁসে যাবে বলে মনে করছেন প্রকাশকরা।

অমর একুশে গ্রন্থমেলা মানেই হাজার-হাজার বইয়ের সমাহার। নতুন বইয়ের টানে দেশ-বিদেশ থেকে সব স্রোত এসে মেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। লেখক-প্রকাশক-পাঠকের মিলনমেলা ফেব্রুয়ারি জুড়েই। কিন্তু এবছর করোনার ছোঁবলে মেলা ঝুলছে পেন্ডুলামে।

অসহায় হয়ে স্থির দাঁড়িয়ে রয়েছে ছাপাখানাগুলো। নেই কোনো তোড়জোড়। মহামারির বছরে গ্রন্থমেলা সময় মতো যে হচ্ছে না তা নিশ্চিত হয়ে গেছে। আদৌ এ বছর মেলা কি হবে? এরকম শঙ্কা নিয়ে দিন গুণছেন প্রকাশকরা।

মহানগর পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শিহাব উদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, যত গুরুত্বপূর্ণ বইগুলো আছে সবাই বসে থাকে যে একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে এগুলো প্রকাশ করবে।

নতুন বছর বইমেলাকে কেন্দ্র করে সারাদেশের প্রায় ১০ লাখ মানুষের ভাগ্যও পেন্ডুলামের মতো ঝুলছে। ই-কমার্সে এখনও বাজার গড়ে না ওঠায় বইখাতের অস্তিত্ব নিয়েও শঙ্কায় আছেন সংশ্লিষ্টরা।

জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, বইমেলার সময় এটার যেমন ক্রেতা এবং পাঠকের সমাগম হয় মেলার বাইরে কিন্তু সেই পরিমাণ পাঠক থাকে না। যার ফলে এই করোনাকালীন সময়ে ই-কমার্সের মাধ্যমে অন্যান্য ব্যবসা যতটুকু সচল হয়েছিল বই ব্যবসাটা কিন্তু ততোটুকু সচল হয়নি।

যে কোনও উপায়ে বইমেলা করার তাগিদ আছে। মেলা না হলে ৫০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছে পুস্তক বিক্রয় সমিতি।

পুস্তক প্রকাশনা ও বিক্রয় সমিতির পরিচালক আবুল বাশার ফিরোজ শেখ বলেন, এই দেশের সমস্ত সেক্টর চলমান, একমাত্র অচল আছে পাবলিকেশন সেক্টর। আমি মনে করি, এই অর্থনীতি ক্ষতিটা আমাদের ৫০ হাজার কোটি টাকার উপরে।

বইমেলা হলে এই খাতের সাথে যুক্ত ৬৪ জেলার ব্যবসায়ীদের সাথে বাংলা সাহিত্যও বাঁচবে বলেও মত প্রকাশকদের।

বাংলা একাডেমি বলছে, এই দুর্যোগে প্রতিদিন হাজারো মানুষের সমাগমসহ নানা কারণে মেলার ব্যবস্থাপনা করা কঠিন হবে। তাই মেলা মার্চ বা এপ্রিলে আয়োজন হলেও হতে পারে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, যেসব সন্তানেরা/শিশুরা শুক্রবার এবং শনিবার ছুটির দিনে শিশু প্রহরে আসবে তাদের কথা মনে রাখতে হবে, চলাচলের কথা মনে রাখতে হবে। অতএব, সমস্ত বিষয়গুলোকে বিবেচনা করে, নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এবং ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে বইমেলা এক মাস পরেও করতে পারবো।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে