অভূতপূর্ব, অবিশ্বাস্য শ্বাসরুদ্ধকর এক জয়ে কোপা দেল রে’র সেমিফাইনালে চলে গেল বার্সেলোনা।
বুধবার রাতে গ্রানাডার বিপক্ষে শেষমুহূর্ত পর্যন্ত ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও, অতিরিক্ত সময়ের চরম নাটকীয়তায় ৫-৩ গোলে জিতেছে কাতালানরা।
যে ৫টি গোল করতে মাত্র ১৮ মিনিট সময় নিয়েছে কোম্যানের দল। জোড়া গোল করেছেন আঁতোয়া গ্রিজম্যান ও জর্ডি আলবা। পেশাদার ক্যারিয়ারে তিনশ’তম অ্যাসিস্টের রেকর্ড গড়েছেন লিওনেল মেসি।
যেন একটা ঘোরের মধ্যে পড়ে গেছে গ্রানাডা। এল গ্রানাডের আকাশচুম্বী আশা ভূপাতিত করেছে কাতালানরা। ৮৭ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও যে এভাবে জেতা যায়, সেটাই প্রমাণ করলো কোম্যানের শিষ্যরা। কামব্যাকের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো লিওনেল মেসিরা।
এমন জয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজির বিপক্ষে সেই ঐতিহাসিক ম্যাচটাকেই মনে করিয়ে দেয়। যদিও সে সময় আর এ সময়ের মধ্যে বিস্তর তফাৎ। মেসি-নেইমার-সুয়ারেজের সে দল ছিলো আগুনের মতো। তবে, এ ম্যাচটা দেখে কেউ কেউ বলেও বসতে পারেন, এতদিন সুপ্ত আগ্নেয়গিরি হয়ে ছিলেন গ্রিজম্যান-রিকি পুইগরাও।
প্রতিপক্ষের জালে ৫ গোল দিয়েছে বার্সেলোনা। পুরো ১২০ মিনিট মাঠে থেকেও গোল পাননি মেসি। তারপরও বার্সা ম্যাজিশিয়ান টেন অন টেন। দুই অ্যাসিস্ট, অন টার্গেট ৭টা শট, ৮৩.৩ শতাংশ নিখুঁত পাস। কি ছিল না এদিন!
পুরো ম্যাচে কাতালানদের ৩৬ শটের ২০টিই অন টার্গেট। কিন্তু, গোলের ধাঁধা মেলাতে কাঠখড় পোড়াতে হলো অনেক। একবার মেসি, আরেকবার ত্রিনকাওয়ের শটে বল ফিরেছে পোস্টে লেগে। কোম্যান বাহিনীর এমন মুহুর্মুহু আক্রমণ সামলাতে হাঁপিয়ে ওঠে গ্রানাডার রক্ষণভাগ। কিন্তু ৩৩ আর ৪৭ মিনিটে দুই অন শটে দুই গোল আদায় করে নিয়েছিলো ফরোয়ার্ডরা। সেমির স্বপ্ন সত্যি হতে বাকি ছিলো মাত্র কয়েকটা মিনিট। তারপরও জায়ান্ট বধ হলো না!
টিভির সামনে বসা যে কাতালান সমর্থকরা হতাশায় চ্যানেল বদলে ফেলতে চেয়েছিলেন, তাদের মুখে হাসি ফোটান আঁতোয়া গ্রিজম্যান। ৮৮ মিনিটে মেসির অ্যাসিস্টে ফরাসি তারকার গোলে শুরু নাটকীয় অধ্যায়ের। যোগ হওয়া সময়ের ২ মিনিটেই জর্দি আলবার গোলে আসে সমতা।
ফলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় খেলা। ১০০ মিনিটে আবারও স্পটলাইটে গ্রিজম্যান। স্কোরলাইন ৩-২। তবে ৩ মিনিট বাদেই পেনাল্টি থেকে আবারও সমতায় ফেরে গ্রানাডা। তবে এগিয়ে যেতে খুব বেশি সময় নেয়নি বার্সাও। ৫ মিনিট পরই স্কোর শিটকে ৪-৩ করে ফেলেন ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং।
হুট করেই যেন গোলের নেশায় পেয়ে বসে কাতালানদের। ১১৩ মিনিটে আলবার গোলে ৫-৩ ব্যবধানে এগিয়ে যায় তারা। হাসিমুখে গোলের কারিগর গ্রিজম্যানকে সাধুবাদ জানান এ স্প্যানিশ লেফটব্যাক। গ্রানাডায় ম্যান অব দ্য নাইট হয়েছেন এই ফ্রেঞ্চম্যানই। তাইতো ম্যাচ শেষে নিশ্চয়ই পিঠ চাপড়ে দিতে কার্পণ্য করেননি কোচ কোম্যানও। ক্যারিয়ারে তিনশ’তম অ্যাসিস্টের রেকর্ড গড়েছেন লিওনেল মেসি।