অবহেলায় পড়ে থাকা রেলের উন্নয়নে নজর দিয়েছে সরকার। এ মুহূর্তে বড় বড় ৪০টিরও বেশি প্রকল্পের কাজ চলছে। তবে প্রকল্প শুরুর পর ব্যয় বৃদ্ধিসহ নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়া বড় সমস্যা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। কোনও কোনও প্রকল্পে ২শ’ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধির নজির আছে।
পদ্মা সেতুর দুই পাড় ও ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারের খরচ ৭৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এর এক বছর পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নতুন লাইন নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারের খরচ ধরা হয় ৪৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
টঙ্গী-ভৈরব বাজার ডাবল লাইনে নির্মাণে ব্যয় বেড়েছে প্রায় ২শ’ গুণ, সময় লেগেছে ১৪০ শতাংশ বেশি। লাকসাম থেকে চিকনী পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণে ব্যয় বেড়েছে ২শ’ ৬০ শতাংশ। টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত ডাবল লাইন নির্মাণে শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮শ’ ৪৭ কোটি টাকা। ২০১২ সালের এ প্রকল্পে আবার ৩শ’ কোটি টাকা বাড়লেও কাজ এগোয়নি।
কয়েকটি ছোট কালভার্ট নির্মাণ ছাড়া লাইন নির্মাণে খুব একটা অগ্রগতি নেই।
নানা জটিলতায় প্রকল্প পরিচালকও বদল করা হয়েছে। নতুন পিডি জানালেন, নানা সমস্যার কারণে কাজের ধীর গতি।
পিডি বলেন, বনানী থেকে মালিবাগ পর্যন্ত এলিভেটর এক্সপ্রেসের অ্যালাইনমেন্টের সাথে রেলেলাইনের কিছু কনফিলিট আছে, সেখানে জায়গার সীমাবদ্ধতা আছে।
রেলমন্ত্রী জানালেন, সব প্রকল্পেই জটিলতা থাকে। তাই নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন করাটা কঠিন।
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, যখন আপনি কাজ করতে গেলেন, তখন দেখবেন যে ওই বাজেটে কাজ হচ্ছে না। স্টেশন বিল্ডিং করা হচ্ছে তখন যদি বলা হয় এ ধরনের নয় অন্যভাবে করতে হবে। তখন কিন্তু আমাদের চাহিদার উপর নির্ভর করে কিছুটা ভেরিয়েশন আসে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাস্তবতার সাথে মিল রেখেই প্রকল্প নেয়া উচিত।
বুয়েটের গণপরিবহন ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, যেটা আমরা আস্তে আস্তে দেখতে পাচ্ছি প্রজেক্টের আওতায় যারাই জড়িত তারাই ভেনিফিসিয়ারি হয়ে যাচ্ছেন। তখন সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন আসে, আসলে অ্যাকাউনটিবিলিটা তাহলে কে আদায় করবে? এটা কিন্তু শঙ্কার ব্যাপার, এটা কিন্তু ভাবনার ব্যাপার।
চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে রেল যোগযোগ নতুন মাত্রা পাবে বলে আশাবাদী রেল কর্তৃপক্ষ।