Dhaka ০২:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৪২:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২
  • 47

নিজস্ব প্রতিবেদক:

অবশেষে মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ। উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ (বুধবার) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের সি-১ ব্লকের খেলার মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফলক উন্মোচন করে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেন। এর আগে বেলা ১১টার দিকে দিয়াবাড়িতে পৌঁছান তিনি। তবে আজ উদ্বোধন হলেও ‘স্বপ্নের বাহনে’ চড়তে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হবে বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) পর্যন্ত।

ফলক উন্মোচনের পর পবিত্র কোরআন তেলোয়াত ও দোয়ার মাধ্যমে মেট্রো রেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিনুল্লা নুরী, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন সিদ্দিক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা ‘মেট্রোরেল’ দেশের জনগণের মাথার নতুন মুকুট। এটি দেশের উন্নয়ন এবং অগ্রযাত্রায় আরেকটি সংযোজন। মেট্রোরেলের প্রথম অংশের কাজ শেষ করতে পারায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

মেট্রোরেল নির্মাণের সময় আশপাশের এলাকার যেসব মানুষ সকল কষ্ট সইয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রেন। মেট্রোরেলের প্রতিটি যন্ত্র ও স্টেশন রক্ষণাবেক্ষণে সবাইকে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এসময় তিনি জানান, মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে একই সঙ্গে প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ চারটি মাইলফলক ছুঁয়েছে। তিনি বলেন, এরমধ্যে প্রথমত, মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে প্রথম বৈদ্যুতিক যানের যুগে প্রবেশ করলো। তৃতীয়ত, ডিজিটাল রিমোট কন্ট্রোল যান এটি, যেটি স্মার্ট বাংলাদেশের বিনির্মাণের একটি ধাপে এগুলো বাংলাদেশ। চতুর্থত, বাংলাদেশ দ্রুতগতিসম্পন্ন যানের যুগে প্রবেশ করল, এটি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার দ্রুতগতিতে চলবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নে আরেকটি পালক মেট্রোরেল। আরেকটি নতুন অহংকারের পালক বাংলাদেশের মানুষের মাথার মুকুটে সংযোজন করলাম। এর আগে উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। বুধবার উদ্বোধন হয়েছে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। উদ্বোধনের পর রুটের মধ্যবর্তী স্টেশনে কোনো স্টপেজ ছাড়াই উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল।

মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভাড়া ৬০ টাকা। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ট্রেন চলবে উত্তরা থেকে মতিঝিল হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত। তখন ওই দূরত্বের ভাড়া হবে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা।

উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রায় বিশ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালে। তবে রাজধানীবাসীর পরিবহন সংকটের কথা মাথায় রেখে দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার  অংশ আগেই উদ্বোধন করা হচ্ছে। এই অংশে ১০ সেট রেল চলবে, প্রতিটিতে বগির সংখ্যা থাকবে ছয়টি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

অবশেষে মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ

Update Time : ০৪:৪২:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:

অবশেষে মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ। উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ (বুধবার) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের সি-১ ব্লকের খেলার মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফলক উন্মোচন করে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেন। এর আগে বেলা ১১টার দিকে দিয়াবাড়িতে পৌঁছান তিনি। তবে আজ উদ্বোধন হলেও ‘স্বপ্নের বাহনে’ চড়তে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হবে বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) পর্যন্ত।

ফলক উন্মোচনের পর পবিত্র কোরআন তেলোয়াত ও দোয়ার মাধ্যমে মেট্রো রেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিনুল্লা নুরী, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন সিদ্দিক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা ‘মেট্রোরেল’ দেশের জনগণের মাথার নতুন মুকুট। এটি দেশের উন্নয়ন এবং অগ্রযাত্রায় আরেকটি সংযোজন। মেট্রোরেলের প্রথম অংশের কাজ শেষ করতে পারায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

মেট্রোরেল নির্মাণের সময় আশপাশের এলাকার যেসব মানুষ সকল কষ্ট সইয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রেন। মেট্রোরেলের প্রতিটি যন্ত্র ও স্টেশন রক্ষণাবেক্ষণে সবাইকে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এসময় তিনি জানান, মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে একই সঙ্গে প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ চারটি মাইলফলক ছুঁয়েছে। তিনি বলেন, এরমধ্যে প্রথমত, মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে প্রথম বৈদ্যুতিক যানের যুগে প্রবেশ করলো। তৃতীয়ত, ডিজিটাল রিমোট কন্ট্রোল যান এটি, যেটি স্মার্ট বাংলাদেশের বিনির্মাণের একটি ধাপে এগুলো বাংলাদেশ। চতুর্থত, বাংলাদেশ দ্রুতগতিসম্পন্ন যানের যুগে প্রবেশ করল, এটি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার দ্রুতগতিতে চলবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নে আরেকটি পালক মেট্রোরেল। আরেকটি নতুন অহংকারের পালক বাংলাদেশের মানুষের মাথার মুকুটে সংযোজন করলাম। এর আগে উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। বুধবার উদ্বোধন হয়েছে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। উদ্বোধনের পর রুটের মধ্যবর্তী স্টেশনে কোনো স্টপেজ ছাড়াই উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল।

মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভাড়া ৬০ টাকা। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ট্রেন চলবে উত্তরা থেকে মতিঝিল হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত। তখন ওই দূরত্বের ভাড়া হবে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা।

উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রায় বিশ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালে। তবে রাজধানীবাসীর পরিবহন সংকটের কথা মাথায় রেখে দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার  অংশ আগেই উদ্বোধন করা হচ্ছে। এই অংশে ১০ সেট রেল চলবে, প্রতিটিতে বগির সংখ্যা থাকবে ছয়টি।