Dhaka ১০:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৩ ডিসেম্বর বগুড়ার নন্দীগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:৪৭:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২০
  • ২৫৯ Time View

টিপু সুলতান,নন্দীগ্রাম(বগুড়া) প্রতিনিধিঃ

১৩ ডিসেম্বর বগুড়ার নন্দীগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১৩ই ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা নন্দীগ্রামে পাকহানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করেছিল।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধকালিন কমান্ডার আবু বক্কর সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতে ইউপি ডেরাডং সাব-ডিভিশনে ভান্ডুয়া সামরিক কেন্দ্রের ৭ নম্বর সেক্টরের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত হিলি হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

এই সময় তারা পাকসেনা ও রাজাকারদের সাথে যুদ্ধ শুরু করে। এরপর তারা নন্দীগ্রাম আশার পথে কাহালুর কড়ই বামুজা গ্রামে পাকহানাদারদের সাথে যুদ্ধ করেছে। সেই যুদ্ধে ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয়েছিল। তার পর আবু বক্কর সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ৯ই ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম প্রবেশ করে ৩ দফা যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।

প্রথমে ১১ই ডিসেম্বর নন্দীগ্রামের মন্ডল পুকুর সিএন্ডবি’র সড়কের পাশে থেকে পাকসেনা ও তাদের দোসরদের ওপর আক্রমণ করে। ওই দিন রণবাঘা বাসষ্ট‍্যান্ডের দক্ষিণ পার্শের বড়ব্রীজের নিকট রাজাকারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়েছিল। অপরদিকে বেলঘরিয়ায় পাকসেনাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধ সংঘটিত হয়। সেই যুদ্ধে একজন পাকসেনা আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকসেনারা রাজাকারদের সহযোগীতায় চাকলমা গ্রামের আকরাম হোসেন, বাদলাশন গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদ, রুস্তমপুর গ্রামের মহিউদ্দিন (মরু মন্ডল), ভাটরা গ্রামের আ.সোবাহান, নন্দীগ্রামের মোফাজ্জল হোসেন, হাটকড়ই গ্রামের ছমির উদ্দিন ও তার দুই পুত্র আ.রাজ্জাক ও আ.রশিদকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এভাবে আরো হত্যাকান্ড ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ১২ই ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা নন্দীগ্রাম থানা আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ২০০ পাকসেনা রাজাকারদের সাথে লড়াই করে। সেই যুদ্ধে ৮০ জন রাজাকার আটকসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিল। নন্দীগ্রামে সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা ঘটে ডাকনীতলায়। সেখানে পাকসেনা রাজাকারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন মরণ যুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ৭১ এর ১৩ই ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাকহানাদার ও রাজাকারদের হটিয়ে নন্দীগ্রামকে হানাদারমুক্ত করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করতে সক্ষম হন।

১৩ই ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ উপজেলা ইউনিট কমান্ড বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

১৩ ডিসেম্বর বগুড়ার নন্দীগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস

Update Time : ০২:৪৭:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২০

টিপু সুলতান,নন্দীগ্রাম(বগুড়া) প্রতিনিধিঃ

১৩ ডিসেম্বর বগুড়ার নন্দীগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১৩ই ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা নন্দীগ্রামে পাকহানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করেছিল।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধকালিন কমান্ডার আবু বক্কর সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতে ইউপি ডেরাডং সাব-ডিভিশনে ভান্ডুয়া সামরিক কেন্দ্রের ৭ নম্বর সেক্টরের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত হিলি হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

এই সময় তারা পাকসেনা ও রাজাকারদের সাথে যুদ্ধ শুরু করে। এরপর তারা নন্দীগ্রাম আশার পথে কাহালুর কড়ই বামুজা গ্রামে পাকহানাদারদের সাথে যুদ্ধ করেছে। সেই যুদ্ধে ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয়েছিল। তার পর আবু বক্কর সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ৯ই ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম প্রবেশ করে ৩ দফা যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।

প্রথমে ১১ই ডিসেম্বর নন্দীগ্রামের মন্ডল পুকুর সিএন্ডবি’র সড়কের পাশে থেকে পাকসেনা ও তাদের দোসরদের ওপর আক্রমণ করে। ওই দিন রণবাঘা বাসষ্ট‍্যান্ডের দক্ষিণ পার্শের বড়ব্রীজের নিকট রাজাকারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়েছিল। অপরদিকে বেলঘরিয়ায় পাকসেনাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধ সংঘটিত হয়। সেই যুদ্ধে একজন পাকসেনা আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকসেনারা রাজাকারদের সহযোগীতায় চাকলমা গ্রামের আকরাম হোসেন, বাদলাশন গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদ, রুস্তমপুর গ্রামের মহিউদ্দিন (মরু মন্ডল), ভাটরা গ্রামের আ.সোবাহান, নন্দীগ্রামের মোফাজ্জল হোসেন, হাটকড়ই গ্রামের ছমির উদ্দিন ও তার দুই পুত্র আ.রাজ্জাক ও আ.রশিদকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এভাবে আরো হত্যাকান্ড ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ১২ই ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা নন্দীগ্রাম থানা আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ২০০ পাকসেনা রাজাকারদের সাথে লড়াই করে। সেই যুদ্ধে ৮০ জন রাজাকার আটকসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিল। নন্দীগ্রামে সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা ঘটে ডাকনীতলায়। সেখানে পাকসেনা রাজাকারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন মরণ যুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ৭১ এর ১৩ই ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাকহানাদার ও রাজাকারদের হটিয়ে নন্দীগ্রামকে হানাদারমুক্ত করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করতে সক্ষম হন।

১৩ই ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ উপজেলা ইউনিট কমান্ড বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করে।