Dhaka ১১:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সীমান্তে কান্না, মাকে ছেড়ে পাকিস্তানে ফিরতে হলো দুই শিশুকে

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৫৩:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  • ২০ Time View

দুই দেশের ‘লড়াই’ আলাদা করে দিল মা ও সন্তানকেও! পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত ছাড়ার নির্দেশের প্রেক্ষিতে এক হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী হলো অটারি সীমান্ত। পাঞ্জাবের আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্তে সন্তানদের নিয়ে স্বামীর কাছে ফেরার পথে এক ভারতীয় নারীকে পাকিস্তানে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

রোববার (২৭ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর প্রদেশের মিরাটের বাসিন্দা ওই নারীর নাম সানা (৩০)। তিনি একজন পাকিস্তানির স্ত্রী। জানা গেছে, ভারতীয় পাসপোর্ট থাকায় সানাকে যেতে দেওয়া হয়নি। তবে তার তিন বছরের ছেলে এবং এক বছরের মেয়ে সন্তানকে পাকিস্তানি পাসপোর্ট থাকায় দেশ ছেড়ে যেতে বলা হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, সানা ২০২০ সালে পাকিস্তানের করাচির চিকিৎসক বিলালের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সম্প্রতি তিনি তার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে ভারতের মিরাটে আসেন। তবে, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে পাকিস্তান-সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত সরকার পাকিস্তানি নাগরিকদের দ্রুত দেশত্যাগের নির্দেশ দেয়।

এই নির্দেশের পর, সানা তার তিন বছর বয়সী ছেলে ও এক বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে ফিরতে রওনা দেন। তবে সীমান্তে তাকে থামানো হয় এবং ভারতীয় পাসপোর্টের কারণে তাকে মিরাটে ফিরে যেতে বলে। অপরদিকে, সেখানকার কর্মকর্তারা বলেন, পাকিস্তানি পাসপোর্ট থাকায় তার শিশুদের ফিরে যেতে বলা হয় (পাকিস্তানে)। 

এমন পরিস্থিতিতে কান্নায় ভেঙে পড়েন সানা। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমার সন্তানরা এখানে থাকতে পারবে না, আবার আমি ওদের নিয়ে পাকিস্তানেও যেতে পারছি না। তিনি জানান, তার স্বামী বিলালও সীমান্তে এসে স্ত্রী-সন্তানদের নিতে অপেক্ষা করছিলেন।

সানা এবং তার পরিবার সীমান্তের কর্মকর্তাদের জানান, শিশুরা মায়ের ছাড়া থাকতে পারবে না। তবে কর্মকর্তারা তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেন এবং জানান, নতুন সরকারি নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

সানা আরও জানান, বিয়ের পর এটি তার দ্বিতীয় ভারত সফর। তিনি সরকারকে অনুরোধ করে বলেন, পেহেলগামের হামলাকারীদের কঠোরতম শাস্তি দিন, কিন্তু আমাদের মতো নিরীহ পরিবারগুলোর মানবিক পরিস্থিতির দিকে দয়া করে নজর দিন। আমাকে ও আমার সন্তানদের পাকিস্তান যেতে দিন।

ভারতীয় একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত দুই দিনে আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানের ২৫০ জনেরও বেশি নাগরিক ভারত ত্যাগ করেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

সীমান্তে কান্না, মাকে ছেড়ে পাকিস্তানে ফিরতে হলো দুই শিশুকে

Update Time : ০৩:৫৩:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

দুই দেশের ‘লড়াই’ আলাদা করে দিল মা ও সন্তানকেও! পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত ছাড়ার নির্দেশের প্রেক্ষিতে এক হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী হলো অটারি সীমান্ত। পাঞ্জাবের আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্তে সন্তানদের নিয়ে স্বামীর কাছে ফেরার পথে এক ভারতীয় নারীকে পাকিস্তানে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

রোববার (২৭ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর প্রদেশের মিরাটের বাসিন্দা ওই নারীর নাম সানা (৩০)। তিনি একজন পাকিস্তানির স্ত্রী। জানা গেছে, ভারতীয় পাসপোর্ট থাকায় সানাকে যেতে দেওয়া হয়নি। তবে তার তিন বছরের ছেলে এবং এক বছরের মেয়ে সন্তানকে পাকিস্তানি পাসপোর্ট থাকায় দেশ ছেড়ে যেতে বলা হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, সানা ২০২০ সালে পাকিস্তানের করাচির চিকিৎসক বিলালের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সম্প্রতি তিনি তার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে ভারতের মিরাটে আসেন। তবে, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে পাকিস্তান-সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত সরকার পাকিস্তানি নাগরিকদের দ্রুত দেশত্যাগের নির্দেশ দেয়।

এই নির্দেশের পর, সানা তার তিন বছর বয়সী ছেলে ও এক বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে ফিরতে রওনা দেন। তবে সীমান্তে তাকে থামানো হয় এবং ভারতীয় পাসপোর্টের কারণে তাকে মিরাটে ফিরে যেতে বলে। অপরদিকে, সেখানকার কর্মকর্তারা বলেন, পাকিস্তানি পাসপোর্ট থাকায় তার শিশুদের ফিরে যেতে বলা হয় (পাকিস্তানে)। 

এমন পরিস্থিতিতে কান্নায় ভেঙে পড়েন সানা। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমার সন্তানরা এখানে থাকতে পারবে না, আবার আমি ওদের নিয়ে পাকিস্তানেও যেতে পারছি না। তিনি জানান, তার স্বামী বিলালও সীমান্তে এসে স্ত্রী-সন্তানদের নিতে অপেক্ষা করছিলেন।

সানা এবং তার পরিবার সীমান্তের কর্মকর্তাদের জানান, শিশুরা মায়ের ছাড়া থাকতে পারবে না। তবে কর্মকর্তারা তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেন এবং জানান, নতুন সরকারি নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

সানা আরও জানান, বিয়ের পর এটি তার দ্বিতীয় ভারত সফর। তিনি সরকারকে অনুরোধ করে বলেন, পেহেলগামের হামলাকারীদের কঠোরতম শাস্তি দিন, কিন্তু আমাদের মতো নিরীহ পরিবারগুলোর মানবিক পরিস্থিতির দিকে দয়া করে নজর দিন। আমাকে ও আমার সন্তানদের পাকিস্তান যেতে দিন।

ভারতীয় একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত দুই দিনে আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানের ২৫০ জনেরও বেশি নাগরিক ভারত ত্যাগ করেছেন।