Dhaka ১২:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমান

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:১৩:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ৭৭ Time View

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি রাজপরিবারের সমালোচনাকারী সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমান।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই প্রতিবেদনটি ধামাচাপা দিয়ে রাখলেও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তা প্রকাশ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

বাইডেন প্রশাসনের প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেওয়া খাশোগিকে আটক বা হত্যার পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রিন্স। দুই বছর আগের আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডে এই প্রথম সরাসরি সৌদি যুবরাজকে দায়ী করল মার্কিন সরকার।

সৌদি শাসক গোষ্ঠীর সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। তিনি ২০১৮ সালের অক্টোবরে দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য তুরস্কের ইস্তাম্বুলস্থ সৌদি কনস্যুলেটে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে গিয়ে নৃশংসভাবে নিহত হন।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালকের দপ্তরের এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা বা আটক করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অভিযানের অনুমোদন দিয়েছিলেন বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।’

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, খাশোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে সৌদি আরবের ৭৬ নাগরিকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এসব সৌদি নাগরিক আমেরিকার ভিসা পাবেন না। তবে বাইডেন প্রশাসন এখনই সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে না বলে জানিয়েছে মার্কিন বার্তা সংস্থাগুলো।

গত বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ক্রাউন প্রিন্সের বাবা বাদশাহ সালমানের সঙ্গে এক টেলিফোন আলাপে সার্বজনীন মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের গুরুত্বের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ব্যক্ত করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

মোহাম্মাদ বিন সালমান ও তার বাবা সৌদি বাদশাহ সালমানের সমালোচক হিসেবে পরিচিত খাশোগি জীবনের নিরাপত্তার ভয়ে আমেরিকায় স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে গিয়েছিলেন। তিনি ওয়াশিংটন ডিসি’র শহরতলীতে বসবাস করতে শুরু করেন এবং সেখানে বসেই ওয়াশিংটন পোস্টে নিবন্ধ লিখে সৌদি রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকেন।

এদিকে খাশোগিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইস্তাবুলে পাঠানো এজেন্টদের ‘বাড়াবাড়ির’ কথা বলে আসছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এ হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত ঘটনায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় সৌদি আরবের একটি আদালত। গত বছর ওই সাজা কমিয়ে ২০ বছরের কারাদণ্ড করা হয়।

সৌদি প্রসিকিউটরদের ভাষ্য মতে, ধস্তাধস্তি করে খাশুগজিকে আটকানো হয় এবং ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে তাকে অতিরিক্ত পরিমাণ ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এর ফলে তার মৃত্যু হয়। এরপর তার মৃতদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে কনস্যুলেটের বাইরে স্থানীয় এক ‘দোসরের’ কাছে দেওয়া হয়।

অবশ্য তুরস্কের গোয়েন্দাদের হাতে পড়া খাশোগির ঘাতকদের কথোপকথনের অডিও রেকর্ডিংয়ে এই হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমান

Update Time : ০৩:১৩:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি রাজপরিবারের সমালোচনাকারী সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমান।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই প্রতিবেদনটি ধামাচাপা দিয়ে রাখলেও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তা প্রকাশ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

বাইডেন প্রশাসনের প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেওয়া খাশোগিকে আটক বা হত্যার পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রিন্স। দুই বছর আগের আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডে এই প্রথম সরাসরি সৌদি যুবরাজকে দায়ী করল মার্কিন সরকার।

সৌদি শাসক গোষ্ঠীর সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। তিনি ২০১৮ সালের অক্টোবরে দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য তুরস্কের ইস্তাম্বুলস্থ সৌদি কনস্যুলেটে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে গিয়ে নৃশংসভাবে নিহত হন।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালকের দপ্তরের এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা বা আটক করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অভিযানের অনুমোদন দিয়েছিলেন বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।’

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, খাশোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে সৌদি আরবের ৭৬ নাগরিকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এসব সৌদি নাগরিক আমেরিকার ভিসা পাবেন না। তবে বাইডেন প্রশাসন এখনই সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে না বলে জানিয়েছে মার্কিন বার্তা সংস্থাগুলো।

গত বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ক্রাউন প্রিন্সের বাবা বাদশাহ সালমানের সঙ্গে এক টেলিফোন আলাপে সার্বজনীন মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের গুরুত্বের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ব্যক্ত করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

মোহাম্মাদ বিন সালমান ও তার বাবা সৌদি বাদশাহ সালমানের সমালোচক হিসেবে পরিচিত খাশোগি জীবনের নিরাপত্তার ভয়ে আমেরিকায় স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে গিয়েছিলেন। তিনি ওয়াশিংটন ডিসি’র শহরতলীতে বসবাস করতে শুরু করেন এবং সেখানে বসেই ওয়াশিংটন পোস্টে নিবন্ধ লিখে সৌদি রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকেন।

এদিকে খাশোগিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইস্তাবুলে পাঠানো এজেন্টদের ‘বাড়াবাড়ির’ কথা বলে আসছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এ হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত ঘটনায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় সৌদি আরবের একটি আদালত। গত বছর ওই সাজা কমিয়ে ২০ বছরের কারাদণ্ড করা হয়।

সৌদি প্রসিকিউটরদের ভাষ্য মতে, ধস্তাধস্তি করে খাশুগজিকে আটকানো হয় এবং ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে তাকে অতিরিক্ত পরিমাণ ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এর ফলে তার মৃত্যু হয়। এরপর তার মৃতদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে কনস্যুলেটের বাইরে স্থানীয় এক ‘দোসরের’ কাছে দেওয়া হয়।

অবশ্য তুরস্কের গোয়েন্দাদের হাতে পড়া খাশোগির ঘাতকদের কথোপকথনের অডিও রেকর্ডিংয়ে এই হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসে।