সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও সমুদ্রবন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ফলে দেশের চারটি সমুদ্রবন্দর—চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রাকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (২০ জুন) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে৷
আবহাওয়াবিদদের মতে, বর্তমানে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগরের উত্তরাংশে এবং বাংলাদেশে প্রবলভাবে সক্রিয় রয়েছে। এটি মূলত বর্ষাকালের একটি স্বাভাবিক জলবায়ুগত প্রক্রিয়া হলেও যখন তা বেশি সক্রিয় হয়, তখন তা ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও বাতাসের গতি বাড়িয়ে তোলে, যার ফলে উপকূলীয় এলাকাগুলো ঝুঁকির মুখে পড়ে। এই সময়ে নদীবন্দর, জেলেদের মাছ ধরার নৌকা ও সামুদ্রিক যাত্রার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন হয়।
সক্রিয় মৌসুমি বায়ু কি?
বিষয়টি নিয়ে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, সাধারণত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়কালে বঙ্গোপসাগর হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এটি ভারত মহাসাগরের উষ্ণ জলীয় বাষ্প বহন করে আনে এবং ভূমি এলাকায় পৌঁছেই ওই বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টির সৃষ্টি করে। যখন এই বায়ু প্রবলভাবে সক্রিয় হয়, তখন বৃষ্টিপাতের মাত্রা বেড়ে যায়, সঙ্গে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, মৌসুমি বায়ুর এই সক্রিয়তা মূলত বঙ্গোপসাগরের ওপর নিম্নচাপ বা লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। নিম্নচাপ যত শক্তিশালী হয়, বায়ুর গতি ও আর্দ্রতা তত বাড়ে। এতে করে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে সাগরের ঢেউও অস্বাভাবিক রকমের উঁচু হতে পারে এবং সমুদ্র বন্দরগুলোকে সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে হয়।
সেজন্য, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এই অবস্থায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার ট্রলার ও নৌযানগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলে। সেইসঙ্গে জেলেদের গভীর সাগরে না যাওয়ার জন্যও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, বঙ্গোপসাগরে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর ফলে বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা, কক্সবাজার, পটুয়াখালী, ভোলা, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর ও ঝালকাঠিসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।