Dhaka ০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রমিকদের আগের অবস্থায় রেখে নতুন বাংলাদেশ সম্ভব নয়: প্রধান উপদেষ্টা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৫০:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
  • ১৫ Time View

শ্রমিকদের জীবনমান আগের অবস্থায় রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন জরুরি।

বৃহস্পতিবার (০১ মে) মহান মে দিবস ও জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ বছরের মে দিবস উদযাপনের প্রতিপাদ্য ছিল, ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে গড়বো এ দেশ নতুন করে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র ও জনতার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শ্রমিকরা। আজ দেশ গড়ার আন্দোলনে তাদের উপযুক্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনগণের অভ্যুত্থান একটি নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করেছে। তবে সেই নতুন বাংলাদেশ বাস্তবে রূপ নেবে না, যদি শ্রমিকদের অবস্থা আগের মতোই থেকে যায়। আজকের স্লোগানটি আমাদের দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

তিনি বলেন, শ্রমিক মালিকের সুসম্পর্কের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মে দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। শ্রমিক ও মালিক পরস্পরের পরিপূরক। পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার ভিত্তিতে আমরা একটি আত্মনির্ভরশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব বলে বিশ্বাস করি।

শ্রমিকদের উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করার কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে হলে মালিক শ্রমিকের ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। শ্রমিকের সম্ভাবনা বিকাশের মাধ্যমে দেশ গঠনে তাদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, প্রথমেই করণীয় নির্ধারণ করে দ্রুত বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যেতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে প্রতিটি সুপারিশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে।

তিনি জানান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে একটি রোডম্যাপ বাস্তবায়ন ও শ্রমমান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নতিকরণে আমরা কাজ করছি। যার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনাও রয়েছে।

অনুষ্ঠানে তিনি শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ৫ জন শ্রমিক পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর করেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সুলতান উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাংবোর একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

শ্রমিকদের আগের অবস্থায় রেখে নতুন বাংলাদেশ সম্ভব নয়: প্রধান উপদেষ্টা

Update Time : ০৭:৫০:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

শ্রমিকদের জীবনমান আগের অবস্থায় রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন জরুরি।

বৃহস্পতিবার (০১ মে) মহান মে দিবস ও জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ বছরের মে দিবস উদযাপনের প্রতিপাদ্য ছিল, ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে গড়বো এ দেশ নতুন করে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র ও জনতার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শ্রমিকরা। আজ দেশ গড়ার আন্দোলনে তাদের উপযুক্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনগণের অভ্যুত্থান একটি নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করেছে। তবে সেই নতুন বাংলাদেশ বাস্তবে রূপ নেবে না, যদি শ্রমিকদের অবস্থা আগের মতোই থেকে যায়। আজকের স্লোগানটি আমাদের দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

তিনি বলেন, শ্রমিক মালিকের সুসম্পর্কের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মে দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। শ্রমিক ও মালিক পরস্পরের পরিপূরক। পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার ভিত্তিতে আমরা একটি আত্মনির্ভরশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব বলে বিশ্বাস করি।

শ্রমিকদের উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করার কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে হলে মালিক শ্রমিকের ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। শ্রমিকের সম্ভাবনা বিকাশের মাধ্যমে দেশ গঠনে তাদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, প্রথমেই করণীয় নির্ধারণ করে দ্রুত বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যেতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে প্রতিটি সুপারিশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে।

তিনি জানান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে একটি রোডম্যাপ বাস্তবায়ন ও শ্রমমান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নতিকরণে আমরা কাজ করছি। যার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনাও রয়েছে।

অনুষ্ঠানে তিনি শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ৫ জন শ্রমিক পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর করেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সুলতান উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাংবোর একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়।