Dhaka ০৬:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘বেসরকারি মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২০’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৪৫:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ১৫৮ Time View

দেশের বেসরকারি মেডিকেল এবং ডেন্টাল কলেজগুলোকে একটি আইনগত কাঠামোর আওতায় পরিচালনার উদ্দেশ্যে ‘বেসরকারি মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২০’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ বাংলাদেশ সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠকে যোগ দেন।

বিকেলে সচিবালয়ে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের বিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলো এতদিন দু’টি নীতিমালার অধীনে চলতো। নীতিমালা দিয়ে সব কিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যাচ্ছিল না, এ জন্য নতুন আইন করা হচ্ছে।’

দেশে বর্তমানে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৭০টি, ডেন্টাল কলেজ ২৬টি। ৩৬টি সরকারি মেডিকেল কলেজ এবং একটি ডেন্টাল কলেজ রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, যে বিভাগে যে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ থাকবে, সেই বিভাগের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সেগুলো পরিচালিত হবে। ঢাকা বিভাগের সব বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে।

সচিব বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী, মেট্রোপলিটন এলাকায় মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপনে দুই একর ও অন্যান্য এলাকায় চার একর জমি থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ‘বেসরকারি মেডিকেল কলেজের একাডেমিক অনুমোদন, একাডেমিক অনুমোদন নবায়ন, শিক্ষা কার্যক্রম, কতজন ছাত্র থাকবে, সে জন্য কি কি ফ্যাসিলিটিজ থাকতে হবে, ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত কি হবে, শিক্ষকদের কি যোগ্যতা থাকবে, কলেজগুলো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে, আর্থিক ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, কি ফ্যাসিলিটিজ থাকবে- এ বিষয়গুলো খসড়া আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

‘প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের অনুপাত হবে ১:১০, অর্থাৎ প্রত্যেক ১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষকের ব্যবস্থা থাকতে হবে। সর্বনিম্ন ছাত্র হতে হবে ৫০ জন। ৫০ জনের কম হলে (মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ) করা যাবে না। ২৫ ভাগের বেশি খন্ডকালীন শিক্ষক রাখা যাবে না, ৭৫ শতাংশ স্থায়ী শিক্ষক থাকতে হবে’, বলেন তিনি।

বর্তমান নীতিমালায় অনেক কিছু স্পষ্ট না থাকায় অনেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ পার্টটাইম শিক্ষক দিয়ে চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি বিষয়ে কমপক্ষে পাঁচজন শিক্ষক থাকতে হবে, সেখানে ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকবে।’

পরিচালনার বিস্তারিত নির্দেশনার জন্য খসড়া আইনে বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা দেয়া আছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, ‘যদি কেউ আইন ভঙ্গ করেন তবে শাস্তির কথা বলা হয়েছে খসড়া আইনে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদন্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড দেয়া যেতে পারে। শর্তপূরণ না করলে অনুমোদন বাতিল হবে বলেও আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।’

রিজার্ভ ফান্ড হিসেবে মেডিকেল কলেজগুলোতে ৩ কোটি ও ডেন্টাল কলেজগুলোকে ২ কোটি টাকা রাখতে হবে বলে আইনের খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনে খসড়া আইনে অনেকগুলো শর্ত দেয়া আছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘মেডিকেল চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একটা ব্যবস্থা রাখতে হবে। চিকিৎসা বর্জ্যগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, নরমাল যে ডাম্পিং গ্রাউন্ড সেখানে ফেললে হবে না। সেখানে থেকে ভাইরাস বা রোগ-জীবাণুর ব্যাপক প্রসার হতে পারে। এ জন্য মেডিকেল কলেজগুলোকে মেডিকেল বর্জ্য ডিসপোজালের ব্যবস্থা রাখতে হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

‘বেসরকারি মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২০’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন

Update Time : ০৬:৪৫:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

দেশের বেসরকারি মেডিকেল এবং ডেন্টাল কলেজগুলোকে একটি আইনগত কাঠামোর আওতায় পরিচালনার উদ্দেশ্যে ‘বেসরকারি মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২০’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ বাংলাদেশ সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠকে যোগ দেন।

বিকেলে সচিবালয়ে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের বিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলো এতদিন দু’টি নীতিমালার অধীনে চলতো। নীতিমালা দিয়ে সব কিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যাচ্ছিল না, এ জন্য নতুন আইন করা হচ্ছে।’

দেশে বর্তমানে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৭০টি, ডেন্টাল কলেজ ২৬টি। ৩৬টি সরকারি মেডিকেল কলেজ এবং একটি ডেন্টাল কলেজ রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, যে বিভাগে যে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ থাকবে, সেই বিভাগের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সেগুলো পরিচালিত হবে। ঢাকা বিভাগের সব বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে।

সচিব বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী, মেট্রোপলিটন এলাকায় মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপনে দুই একর ও অন্যান্য এলাকায় চার একর জমি থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ‘বেসরকারি মেডিকেল কলেজের একাডেমিক অনুমোদন, একাডেমিক অনুমোদন নবায়ন, শিক্ষা কার্যক্রম, কতজন ছাত্র থাকবে, সে জন্য কি কি ফ্যাসিলিটিজ থাকতে হবে, ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত কি হবে, শিক্ষকদের কি যোগ্যতা থাকবে, কলেজগুলো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে, আর্থিক ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, কি ফ্যাসিলিটিজ থাকবে- এ বিষয়গুলো খসড়া আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

‘প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের অনুপাত হবে ১:১০, অর্থাৎ প্রত্যেক ১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষকের ব্যবস্থা থাকতে হবে। সর্বনিম্ন ছাত্র হতে হবে ৫০ জন। ৫০ জনের কম হলে (মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ) করা যাবে না। ২৫ ভাগের বেশি খন্ডকালীন শিক্ষক রাখা যাবে না, ৭৫ শতাংশ স্থায়ী শিক্ষক থাকতে হবে’, বলেন তিনি।

বর্তমান নীতিমালায় অনেক কিছু স্পষ্ট না থাকায় অনেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ পার্টটাইম শিক্ষক দিয়ে চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি বিষয়ে কমপক্ষে পাঁচজন শিক্ষক থাকতে হবে, সেখানে ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকবে।’

পরিচালনার বিস্তারিত নির্দেশনার জন্য খসড়া আইনে বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা দেয়া আছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, ‘যদি কেউ আইন ভঙ্গ করেন তবে শাস্তির কথা বলা হয়েছে খসড়া আইনে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদন্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড দেয়া যেতে পারে। শর্তপূরণ না করলে অনুমোদন বাতিল হবে বলেও আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।’

রিজার্ভ ফান্ড হিসেবে মেডিকেল কলেজগুলোতে ৩ কোটি ও ডেন্টাল কলেজগুলোকে ২ কোটি টাকা রাখতে হবে বলে আইনের খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনে খসড়া আইনে অনেকগুলো শর্ত দেয়া আছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘মেডিকেল চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একটা ব্যবস্থা রাখতে হবে। চিকিৎসা বর্জ্যগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, নরমাল যে ডাম্পিং গ্রাউন্ড সেখানে ফেললে হবে না। সেখানে থেকে ভাইরাস বা রোগ-জীবাণুর ব্যাপক প্রসার হতে পারে। এ জন্য মেডিকেল কলেজগুলোকে মেডিকেল বর্জ্য ডিসপোজালের ব্যবস্থা রাখতে হবে।’