Dhaka ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
মা-শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সৌদিতে ২০ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময়সীমা দুই মাস বাড়ালো ইসি সংস্কার না করে কোনো নির্বাচনেই ভালো ফল পাওয়া যাবে না : কমিশন প্রধান ঢাকায় রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধির পূর্বাভাস, বাড়বে গরমের অনুভূতি জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় টেকসই কর্মসূচি বাড়ানো হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা রাজনৈতিক পর্যায়ে সার্কের অগ্রগতি হয়নি : নেপালের রাষ্ট্রদূত শান্তিরক্ষা মিশনে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ১৯১ রানেই অলআউট টাইগাররা প্রধান উপদেষ্টা কাতার সফরে যাচ্ছেন সোমবার

পদ্মা সেতুতে ব্যবহারের জন্য স্টিল গার্ডারের প্রথম ব্যাচ চট্টগ্রাম বন্দরে

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:১৬:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০
  • ৯৭ Time View

বহুল প্রতীক্ষার পরে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে (পিবিআরএলপি) ব্যবহারের জন্য স্টিল গার্ডারের প্রথম ব্যাচ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। প্রকল্প শেষ করার নির্দিষ্ট সময়সীমা বিবেচনায় প্রকল্পের ক্ষেত্রে এটা বড় ধরণের অগ্রগতি।  প্রকল্পের অগ্রগতি ঘোষণায় সিআরইসি এ তথ্য জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারির পরে ব্যাপক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্টিল বিমের নির্মাণ। এ প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের (সিআরইসি) তথ্যানুসারে, স্টিল বিমের নির্মাণ ও সরবরাহ বেশ কঠিন কাজ ছিলো। ইয়াংসি নদীতে পানির অত্যাধিক মাত্রা এবং ক্রমাগত মুষলধারে বৃষ্টির ফলে জিয়াংশি প্রদেশের জিউজিয়াং সিটি থেকে সাংহাই বন্দরের পানিপথ কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।

তা সত্ত্বেও, প্রকল্পের কঠোর সময়সীমা বিবেচনা করে, বিমগুলোর যতো দ্রুত সম্ভব শিপিং নিশ্চিতে সিআরইসি সাংহাই বন্দরে কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধির মতো অতিরিক্ত নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

কোরবানির ঈদের বন্ধের মধ্যে এ চালান চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায় এবং চালানের বন্দরের ছাড়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রেও বিলম্ব ঘটে। প্রকল্প সাইটে এ চালান যতো দ্রুতসম্ভব পৌঁছানো নিশ্চিত করতে সিআরইসি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

স্টিল গার্ডারের আনুমানিক ওজন হবে ৫০ হাজার টন যার মধ্যে রয়েছে: ৮টি স্টিল ট্রাস গার্ডার ব্রিজ এবং ৫৩টি স্টিল প্লেট গার্ডার ব্রিজ। স্টিল গার্ডারগুলো নির্মাণ করেছে চায়না রেলওয়ে হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রি কো. লিমিটেড এবং সংযোজন প্রক্রিয়া ও সাইটে তোলার জন্য গার্ডারগুলো সাংহাই বন্দর থেকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।

পরিবহনকৃত স্টিল বিমগুলো ৮৭, ৪৫, ৪৯, ৫৬, ১০৭, ১১২ ও ১২০ নাম্বার সেতু তোলায় ব্যবহৃত হবে। এ সেতুগুলোই এ প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা প্রথম উন্মুক্ত করা হবে।

আলাদা আলাদা স্প্যানের স্টিল বিম পুরো সক্ষমতায় উৎপাদনে যাওয়ার পূর্বে কারখানায় পরীক্ষামূলক সংযোজন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। উৎপাদনকালে বিমগুলোকে বিভিন্ন রঙ দিয়ে চিহ্নিত করা হয় যাতে আলাদা সেতুতে ব্যবহারের জন্য পৃথক করা যেতে পারে।

এছাড়াও, নানা ধরণের বিম রয়েছে যার জন্য আলাদা প্রকৌশল টেকনিক ও প্রযুক্তি দরকার এবং এর উৎপাদন প্রক্রিয়াও অত্যন্ত উচ্চ মানসম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন। চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের (সিআরইসি) নির্মাণাধীন ১৬৮ দশমিক ৬ কিলোমিটার এ প্রকল্প ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত। সম্পূর্ণ প্রকল্পের মধ্যে ১৬ দশমিক ৭ কিলোমিটার এলিভেটেড রেলওয়ে রয়েছে। এ প্রকল্পের মধ্যে আছে ১৮১ কিলোমিটার ব্যালাস্টেড ট্র্যাক এবং ৩২ কিলোমিটার ব্যালাস্ট বিহীন ট্র্যাক এবং ৬৩টি বড়, মাঝারি ও ছোট সেতু। যার মাধ্যমে সব মিলে ৩০ দশমিক ৫ কিলোমিটার তৈরি হবে এবং প্রকল্পে রয়েছে ২৩০টি বিভিন্ন আকৃতির কালভার্ট।

এ প্রকল্প বাংলাদেশের রেলওয়ে নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ প্রকল্প সম্পন্ন হলে তা বাংলাদেশের ট্র্যাফিক অবস্থার উন্নীতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরাণ্বিত করবে।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সিআরইসি’র তথ্য অনুযায়ী, এন৮ সড়ক বন্ধ থাকা এবং বন্যা ও কোভিড-১৯ সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে এ প্রকল্প সম্পন্ন হতে বিলম্ব হবে। এক্ষেত্রে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান উল্লেখিত এ কারণগুলোর নেতিবাচক প্রভাব রোধে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

মা-শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

পদ্মা সেতুতে ব্যবহারের জন্য স্টিল গার্ডারের প্রথম ব্যাচ চট্টগ্রাম বন্দরে

Update Time : ০৫:১৬:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০

বহুল প্রতীক্ষার পরে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে (পিবিআরএলপি) ব্যবহারের জন্য স্টিল গার্ডারের প্রথম ব্যাচ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। প্রকল্প শেষ করার নির্দিষ্ট সময়সীমা বিবেচনায় প্রকল্পের ক্ষেত্রে এটা বড় ধরণের অগ্রগতি।  প্রকল্পের অগ্রগতি ঘোষণায় সিআরইসি এ তথ্য জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারির পরে ব্যাপক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্টিল বিমের নির্মাণ। এ প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের (সিআরইসি) তথ্যানুসারে, স্টিল বিমের নির্মাণ ও সরবরাহ বেশ কঠিন কাজ ছিলো। ইয়াংসি নদীতে পানির অত্যাধিক মাত্রা এবং ক্রমাগত মুষলধারে বৃষ্টির ফলে জিয়াংশি প্রদেশের জিউজিয়াং সিটি থেকে সাংহাই বন্দরের পানিপথ কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।

তা সত্ত্বেও, প্রকল্পের কঠোর সময়সীমা বিবেচনা করে, বিমগুলোর যতো দ্রুত সম্ভব শিপিং নিশ্চিতে সিআরইসি সাংহাই বন্দরে কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধির মতো অতিরিক্ত নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

কোরবানির ঈদের বন্ধের মধ্যে এ চালান চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায় এবং চালানের বন্দরের ছাড়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রেও বিলম্ব ঘটে। প্রকল্প সাইটে এ চালান যতো দ্রুতসম্ভব পৌঁছানো নিশ্চিত করতে সিআরইসি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

স্টিল গার্ডারের আনুমানিক ওজন হবে ৫০ হাজার টন যার মধ্যে রয়েছে: ৮টি স্টিল ট্রাস গার্ডার ব্রিজ এবং ৫৩টি স্টিল প্লেট গার্ডার ব্রিজ। স্টিল গার্ডারগুলো নির্মাণ করেছে চায়না রেলওয়ে হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রি কো. লিমিটেড এবং সংযোজন প্রক্রিয়া ও সাইটে তোলার জন্য গার্ডারগুলো সাংহাই বন্দর থেকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।

পরিবহনকৃত স্টিল বিমগুলো ৮৭, ৪৫, ৪৯, ৫৬, ১০৭, ১১২ ও ১২০ নাম্বার সেতু তোলায় ব্যবহৃত হবে। এ সেতুগুলোই এ প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা প্রথম উন্মুক্ত করা হবে।

আলাদা আলাদা স্প্যানের স্টিল বিম পুরো সক্ষমতায় উৎপাদনে যাওয়ার পূর্বে কারখানায় পরীক্ষামূলক সংযোজন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। উৎপাদনকালে বিমগুলোকে বিভিন্ন রঙ দিয়ে চিহ্নিত করা হয় যাতে আলাদা সেতুতে ব্যবহারের জন্য পৃথক করা যেতে পারে।

এছাড়াও, নানা ধরণের বিম রয়েছে যার জন্য আলাদা প্রকৌশল টেকনিক ও প্রযুক্তি দরকার এবং এর উৎপাদন প্রক্রিয়াও অত্যন্ত উচ্চ মানসম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন। চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের (সিআরইসি) নির্মাণাধীন ১৬৮ দশমিক ৬ কিলোমিটার এ প্রকল্প ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত। সম্পূর্ণ প্রকল্পের মধ্যে ১৬ দশমিক ৭ কিলোমিটার এলিভেটেড রেলওয়ে রয়েছে। এ প্রকল্পের মধ্যে আছে ১৮১ কিলোমিটার ব্যালাস্টেড ট্র্যাক এবং ৩২ কিলোমিটার ব্যালাস্ট বিহীন ট্র্যাক এবং ৬৩টি বড়, মাঝারি ও ছোট সেতু। যার মাধ্যমে সব মিলে ৩০ দশমিক ৫ কিলোমিটার তৈরি হবে এবং প্রকল্পে রয়েছে ২৩০টি বিভিন্ন আকৃতির কালভার্ট।

এ প্রকল্প বাংলাদেশের রেলওয়ে নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ প্রকল্প সম্পন্ন হলে তা বাংলাদেশের ট্র্যাফিক অবস্থার উন্নীতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরাণ্বিত করবে।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সিআরইসি’র তথ্য অনুযায়ী, এন৮ সড়ক বন্ধ থাকা এবং বন্যা ও কোভিড-১৯ সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে এ প্রকল্প সম্পন্ন হতে বিলম্ব হবে। এক্ষেত্রে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান উল্লেখিত এ কারণগুলোর নেতিবাচক প্রভাব রোধে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।