Dhaka ০২:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুশ্চিন্তা দূর করতে যা যা করণীয়

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:৪২:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ১৪৪ Time View

বর্তমান জীবন ব্যবস্থায় দুশ্চিন্তা একটি স্বাভাবিক বিষয়। সবার ক্ষেত্রেই কমবেশি এই সমস্যা দেখা দেয়। তবে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে তখনই যখন মাত্রাতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় ভোগেন। এ জন্যই শরীরে দেখা দেয় নানাবিধ সমস্যা।

দুশ্চিন্তার কারণে মনের ওপর প্রভাব পড়ে সবচেয়ে বেশি। খিটমিটে মেজাজ, অল্পতেই বিষণ্ন হওয়া, অল্পতেই রেগে যাওয়া, অভিমান, হতাশার মতো অনেক ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে শুধু দুশ্চিন্তার কারণে। আর করোনাকালে মানসিক চাপ ও মেজাজ খারাপের হাত ধরে অন্য রোগও যে এসে হাজির হবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

দুশ্চিন্তায় বাড়তে পারে যে রোগ

• উদ্বেগ বাড়লে অনেকেই যা খুশি খেতে শুরু করেন, শুয়ে-বসে থাকেন, নেশা করেন। তার হাত ধরে বাড়ে ওজন এবং এই ওজনের সঙ্গে সম্পর্কিত অসুখবিসুখের

আশঙ্কা। আগে থেকে রোগ থাকলে তার প্রকোপও বাড়ে। যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হাই কোলেস্টেরল, ফ্যাটি লিভার, হৃদরোগ ও গেঁটে বাত ইত্যাদি।

• মানসিক চাপের সঙ্গে সরাসরি যোগ আছে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের। অনিদ্রা, খিটখিটে মেজাজের সম্পর্ক আছে মানসিক চাপের সঙ্গে। সব মিলে জীবন বিপর্যস্ত হয় আর তাতে কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। সেই সঙ্গে বাড়ে সংক্রমণের আশঙ্কা।

• লাগাতার উদ্বেগে অম্বল-গ্যাসট্রিক, বদহজম বাড়ে। এগুলোর চিকিৎসা না হলে আরও বাড়ে।

• মেয়েদের ঋতুস্রাব অনিয়মিত হওয়ার মূলেও হাত আছে উদ্বেগ-দুশ্চিন্তার।

• দুশ্চিন্তার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আপনার মস্তিষ্কও। যখন অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করছেন তখন আপনার শরীরে কারটিসল হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে আপনার মস্তিষ্কের স্মৃতিভ্রষ্টতা, বুদ্ধিবৈকল্য দেখা দিতে পারে।

দুশ্চিন্তা করে যখন করোনাকে ঠেকাতে পারবেন না, তখন দুশ্চিন্তাকেই ঠেকানোর চেষ্টা করুন। মনোচিকিৎসকদের মত, ‘চাপকে চাপের মতো থাকতে দিন। নিজে সামান্য কয়েকটা নিয়ম মেনে চলুন, দেখবেন মূল সমস্যা না মিটলেও আপনার উপর তার প্রভাব কম পড়ছে।’

জীবনযাপনের এইসব নিয়ম মেনে চলুন। যেমন-

• ‘নিউ নর্মাল জীবন’-কে মেনে নিন। যত তাড়াতাড়ি মানতে পারবেন, তত ভাল থাকবেন। কোনো বিষয়ে বেশি দুশ্চিন্তা হলে খুলে বলুন। সমস্যার আলোচনা এবং হালকা গল্প-গুজব আপনার মানসিক অবসাদ কাটিয়ে তুলবে।

• মন হালকা করার নতুন পথ খুঁজুন। বই পড়া হোক কি গান শোনা, ঘরে বসে সিনেমা দেখা বা হালকা ব্যায়াম করা যে কোনও পথ বেছে নিন। যোগাসন ও মেডিটেশন অভ্যাসেও মন হালকা হয়।

• টিভিতে বা মোবাইলে হালকা অনুষ্ঠান দেখুন। হাসির অনুষ্ঠান দেখলে আরও ভাল।

• ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ওবেসিটি থাকলে নিয়ম করে ব্যায়াম করুন।

• খাওয়াতে রাশ টানুন। ডায়াবেটিস ও মেদবাহুল্য থাকলে কার্বোহাইড্রেট ও মিষ্টি কম খান। রক্তচাপ বেশি হলে নোনতা খাবার ও ভাজাভুজি বাদ দিন।

• ঘন ঘন চা-কফি-সফট ড্রিঙ্কস পান করে ঘুম নষ্ট করবেন না। মন ভাল রাখার অর্ধেক ওষুধ কিন্তু লুকিয়ে আছে ঘুমের মাঝেই।

• কোনও সমস্যা হচ্ছে মনে হলেই ডাক্তার দেখান। অনেকেই আজকাল অনলাইন রোগী দেখছেন। চেম্বারে যেতে সমস্যা মনে হলে ফোন করে পরামর্শ নিন। নিজে থেকে ওষুধ খেয়ে বিপদ বাড়াবেন না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

দুশ্চিন্তা দূর করতে যা যা করণীয়

Update Time : ০২:৪২:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

বর্তমান জীবন ব্যবস্থায় দুশ্চিন্তা একটি স্বাভাবিক বিষয়। সবার ক্ষেত্রেই কমবেশি এই সমস্যা দেখা দেয়। তবে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে তখনই যখন মাত্রাতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় ভোগেন। এ জন্যই শরীরে দেখা দেয় নানাবিধ সমস্যা।

দুশ্চিন্তার কারণে মনের ওপর প্রভাব পড়ে সবচেয়ে বেশি। খিটমিটে মেজাজ, অল্পতেই বিষণ্ন হওয়া, অল্পতেই রেগে যাওয়া, অভিমান, হতাশার মতো অনেক ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে শুধু দুশ্চিন্তার কারণে। আর করোনাকালে মানসিক চাপ ও মেজাজ খারাপের হাত ধরে অন্য রোগও যে এসে হাজির হবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

দুশ্চিন্তায় বাড়তে পারে যে রোগ

• উদ্বেগ বাড়লে অনেকেই যা খুশি খেতে শুরু করেন, শুয়ে-বসে থাকেন, নেশা করেন। তার হাত ধরে বাড়ে ওজন এবং এই ওজনের সঙ্গে সম্পর্কিত অসুখবিসুখের

আশঙ্কা। আগে থেকে রোগ থাকলে তার প্রকোপও বাড়ে। যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হাই কোলেস্টেরল, ফ্যাটি লিভার, হৃদরোগ ও গেঁটে বাত ইত্যাদি।

• মানসিক চাপের সঙ্গে সরাসরি যোগ আছে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের। অনিদ্রা, খিটখিটে মেজাজের সম্পর্ক আছে মানসিক চাপের সঙ্গে। সব মিলে জীবন বিপর্যস্ত হয় আর তাতে কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। সেই সঙ্গে বাড়ে সংক্রমণের আশঙ্কা।

• লাগাতার উদ্বেগে অম্বল-গ্যাসট্রিক, বদহজম বাড়ে। এগুলোর চিকিৎসা না হলে আরও বাড়ে।

• মেয়েদের ঋতুস্রাব অনিয়মিত হওয়ার মূলেও হাত আছে উদ্বেগ-দুশ্চিন্তার।

• দুশ্চিন্তার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আপনার মস্তিষ্কও। যখন অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করছেন তখন আপনার শরীরে কারটিসল হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে আপনার মস্তিষ্কের স্মৃতিভ্রষ্টতা, বুদ্ধিবৈকল্য দেখা দিতে পারে।

দুশ্চিন্তা করে যখন করোনাকে ঠেকাতে পারবেন না, তখন দুশ্চিন্তাকেই ঠেকানোর চেষ্টা করুন। মনোচিকিৎসকদের মত, ‘চাপকে চাপের মতো থাকতে দিন। নিজে সামান্য কয়েকটা নিয়ম মেনে চলুন, দেখবেন মূল সমস্যা না মিটলেও আপনার উপর তার প্রভাব কম পড়ছে।’

জীবনযাপনের এইসব নিয়ম মেনে চলুন। যেমন-

• ‘নিউ নর্মাল জীবন’-কে মেনে নিন। যত তাড়াতাড়ি মানতে পারবেন, তত ভাল থাকবেন। কোনো বিষয়ে বেশি দুশ্চিন্তা হলে খুলে বলুন। সমস্যার আলোচনা এবং হালকা গল্প-গুজব আপনার মানসিক অবসাদ কাটিয়ে তুলবে।

• মন হালকা করার নতুন পথ খুঁজুন। বই পড়া হোক কি গান শোনা, ঘরে বসে সিনেমা দেখা বা হালকা ব্যায়াম করা যে কোনও পথ বেছে নিন। যোগাসন ও মেডিটেশন অভ্যাসেও মন হালকা হয়।

• টিভিতে বা মোবাইলে হালকা অনুষ্ঠান দেখুন। হাসির অনুষ্ঠান দেখলে আরও ভাল।

• ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ওবেসিটি থাকলে নিয়ম করে ব্যায়াম করুন।

• খাওয়াতে রাশ টানুন। ডায়াবেটিস ও মেদবাহুল্য থাকলে কার্বোহাইড্রেট ও মিষ্টি কম খান। রক্তচাপ বেশি হলে নোনতা খাবার ও ভাজাভুজি বাদ দিন।

• ঘন ঘন চা-কফি-সফট ড্রিঙ্কস পান করে ঘুম নষ্ট করবেন না। মন ভাল রাখার অর্ধেক ওষুধ কিন্তু লুকিয়ে আছে ঘুমের মাঝেই।

• কোনও সমস্যা হচ্ছে মনে হলেই ডাক্তার দেখান। অনেকেই আজকাল অনলাইন রোগী দেখছেন। চেম্বারে যেতে সমস্যা মনে হলে ফোন করে পরামর্শ নিন। নিজে থেকে ওষুধ খেয়ে বিপদ বাড়াবেন না।