নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, গ্যাস পাইপের লাইনের ওপর কিভাবে মসজিদ নির্মাণ হলো, রাজউকের অনুমোদন ছিলো কিনা, সব কিছু তদন্তে জানা যাবে। ঘটনার পর থেকেই তিনি সার্বক্ষণিক দগ্ধদের খোঁজ খবর রাখছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। সংসদে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্পিকার ডক্টর শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সকালে শুরু হয় একাদশ জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশন।
বিস্ফোরণের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে যে ঘটনাটা ঘটেছে, মসজিদে যে বিস্ফোরণ ঘটল এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা সেখানে গেছেন। সেখানে নমুনা সংগ্রহ করছেন। এই ঘটনাটা কেন ঘটল, কীভাবে ঘটল সে বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে এবং আমি মনে করি, সেটা অবশ্যই বের হবে।’
তিনি বলেন, ‘যখনই এ ধরনের ঘটনা ঘটে আমার সঙ্গে কিন্তু সবসময় আমাদের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল মেসেজ পাঠিয়েছে। প্রতিমুহূর্তে সকালে, বিকেলে মেসেজ পাঠাচ্ছে এবং রোগীদের অবস্থা জানাচ্ছে। অনেকে মারা গেছেন। বাকি যারা তাদের পোড়ার অবস্থা এত খারাপ তারপরও চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাদের সব ধরনের চিকিৎসা আমরা দিচ্ছি। এখন আল্লাহ যদি এদের জীবনটা দিয়ে যান।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে মসজিদে নামাজ পড়া অবস্থায় এ ধরনের একটা বিস্ফোরণ। ওইটুকু একটা জায়গায় ছয়টা এসি লাগানো আবার গ্যাসের লাইনের ওপর নাকি এই মসজিদটি নির্মাণ! সাধারণত যেখানেই গ্যাসের পাইপ লাইন থাকে সেখানে কোনো নির্মাণ কাজ হয় না। আমি জানি না, রাজউক কি এটার পারমিশন দিয়েছে কি-না। এটা পারমিশন তো দিতে পারে না, দেয়া উচিত না।’
ক্যাবিনেট সেক্রেটারিকে এ বিষয়ে বলা হয়েছে এবং নির্দেশ গেছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছি এর কারণটা খুঁজে বের করার। সারা বাংলাদেশে মসজিদগুলোতে যারা অপরিকল্পিতভাবে, ইচ্ছামতো এয়ারকন্ডিশন লাগাচ্ছেন বা যেখানে সেখানে একটা মসজিদ গড়ে তুলছেন, সে জায়গাটা আ-দৌ একটা স্থাপনা করবার মতো জায়গা কি-না, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেয়া বা সেখানে নকশাগুলো করা হয়েছে কি-না, সেই বিষয়গুলো কিন্তু দেখা একান্ত প্রয়োজন। নইলে এ ধরনের ঘটনা দুর্ঘটনা যেকোনো সময় ঘটতে পারে।’
সংসদে সাবেক মন্ত্রী ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম, ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীসহ দেশে-বিদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী, নারায়ণগঞ্জে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ ও লেবাননে বিস্ফোরণে নিহতদের স্মরণে শোক প্রকাশ করা হয়। এর আগে সংসদে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।
মারা যাওয়া এসব ব্যক্তিদের স্মরণ করে সংসদে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন সংসদ সদস্য রুহুল আমীন মাদানী। পরে সংসদের বৈঠক সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।